অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩ বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, প্রবৃদ্ধি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের দিকগুলো বিশ্লেষণ করে। এই সমীক্ষা রিপোর্টে ২০২২-২৩ অর্থবছরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি বিস্তারিত বিবরণ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলন এবং দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অর্থনৈতিক সমীক্ষা বাংলাদেশ সরকারের বাজেট প্রণয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা, নীতিগত উদ্যোগ এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা তুলে ধরে। সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অর্থনৈতিক সমীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
চাকরির পরীক্ষায় অর্থনৈতিক সমীক্ষা:
বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে প্রশ্ন আসে। বিশেষ করে,
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা: প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে প্রশ্ন থাকে।
- বাংক পরীক্ষা: বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় অর্থনৈতিক সমীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
- অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষা: রেলওয়ে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ইত্যাদির নিয়োগ পরীক্ষায়ও অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে প্রশ্ন আসতে পারে।
সিলেবাস:
অর্থনৈতিক সমীক্ষা চাকরির পরীক্ষায় যে বিষয়গুলো থেকে প্রশ্ন আসে তার একটি ধারণা নিচে দেওয়া হলো:
- বাংলাদেশের অর্থনীতির ওভারভিউ: জিডিপি, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, দারিদ্র্য, খাদ্য নিরাপত্তা ইত্যাদি।
- কৃষি: কৃষি উৎপাদন, নীতি, সমস্যা ও সমাধান।
- শিল্প: শিল্পায়নের ধারা, গুরুত্বপূর্ণ শিল্প, নীতি ও চ্যালেঞ্জ।
- বাণিজ্য: বাণিজ্য নীতি, রপ্তানি-আমদানি, বাণিজ্য ঘাটতি।
- বৈদেশিক সহায়তা: বৈদেশিক সহায়তার উৎস, ব্যবহার ও প্রভাব।
- মুদ্রা ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা: মুদ্রা নীতি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, আর্থিক বাজার।
- সরকারি বাজেট: বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া, বাজেট ঘাটতি, রাজস্ব ব্যবস্থা।
- পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা: পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য, নীতি ও প্রয়োগ।
- দারিদ্র্য বিমোচন: দারিদ্র্যের সংজ্ঞা, কারণ, বিমোচন নীতি ও কর্মসূচি।
- মানবসম্পদ উন্নয়ন: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ইত্যাদির মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন।
- পরিবেশ: পরিবেশগত সমস্যা, নীতি ও টেকসই উন্নয়ন।
প্রধান আলোচ্যসূচী:
- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৭.২% হারে প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ছিল বিশ্বের অন্যতম উচ্চতম প্রবৃদ্ধি হার।
- স্থিতিশীলতা: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে।
- শিল্প: শিল্প খাত ৮.৫% হারে প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে।
- কৃষি: কৃষি খাত ৩.৬% হারে প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
- সেবা: সেবা খাত ৭.৪% হারে প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। পর্যটন, আইটি এবং আর্থিক সেবা খাতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
- সামাজিক উন্নয়ন: দারিদ্র্য হ্রাস, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
- দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা: বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
চ্যালেঞ্জ:
- বৈদেশিক ঋণ: বৈদেশিক ঋণ বৃদ্ধি একটি উদ্বেগের বিষয়।
- অবকাঠামো: অপর্যাপ্ত অবকাঠামো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
- জলবায়ু পরিবর্তন: জলবায়ু পরিবর্তন কৃষি ও অন্যান্য খাতকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
উপসংহার:
বাংলাদেশ অর্থনীতি শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং দারিদ্র্য হ্রাস ও সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে, বৈদেশিক ঋণ, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সরকার দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ